অনিমা তার পরিবারের সদস্যদের সাথে মাইক্রোবাসে করে কুয়াকাটায় বেড়াতে যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় দুটি ফেরি তারা নির্বিঘ্নে পার হলো। কিন্তু মহীপুরের ফেরি পার হতে গিয়ে দেখে যে, ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসের কারণে ফেরি সংলগ্ন পন্টুনের তিন-চতুর্থাংশ পানির নিচে ডুবে গেছে। তাদেরকে ফেরি পার হওয়ার জন্য সেখানে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনিমার বাবা সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারেন, সরকার এ ধরনের অবস্থা মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

জনাব আমজাদ সম্প্রতি 'X' নামক একটি দেশ নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেন। দেশটির কৃষি হলো অপ্রধান খাত। দেশের মানুষের ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার হার ও বিনিয়োগের হার উচ্চ। জনাব আমজাদ তার নিবন্ধে '' নামক অন্য একটি দেশের সাথে তুলনা করে লিখেছেন, '' দেশের মানুষের জাতীয় উৎপাদনের একক বৃহত্তম খাত হলো কৃষি। দেশটি তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করতে পারে না। দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য অনুকূল নয়।

২০১৮ সালে 'ও' দেশে বসবাসরত জনগণের উৎপাদিত সকল দ্রব্য ও সেবা বাবদ মোট প্রাপ্ত অর্থ ১২০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ঐ বছর দেশের অভ্যন্তরে কর্মরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের প্রাপ্ত অর্থ ৩০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার ছিল। দেশটিতে ১১০০ মিলিয়ন জনসংখ্যার • বসবাস হলেও ঐ বছর জনসংখ্যার বৃহদংশ বিভিন্ন দেশে কাজ করে ৮০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার প্রেরণ করে।

দৃশ্যপট-১: ২০১৭-১৮ অর্থবছরে 'A' দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত মোট দ্রব্য ও সেবার আর্থিক মূল্য ২৪,০০০ কোটি টাকা। তন্মধ্যে ঐ দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার মূল্য ১,৫০০ কোটি টাকা এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী 'A' দেশের নাগরিকদের মোট উৎপাদনের আর্থিক মূল্য ৪,০০০ কোটি টাকা। 

দৃশ্যপট-২: 'B' দেশটিতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে লোকসংখ্যা ছিল ২ লক্ষ, তাদের মোট আয় ছিল ২০ কোটি ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশটিতে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২.০২ লক্ষ। তাদের উৎপাদিত মোট দ্রব্যাদির অর্থমূল্য গিয়ে দাঁড়ায় ২২ কোটি ডলারে। দেশটির অভ্যন্তরে এরূপ অবস্থা বেশ কয়েক বছর যাবত চলে আসছে।

দৃশ্যপট ১: 'M' নামক দেশের অধিকাংশ লোক কৃষির ওপর নির্ভরশীল। উক্ত দেশটিতে কাজের ক্ষেত্রে কিছু করা বা ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতার ৪। অভাব রয়েছে। উক্ত দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যও অনুকূলে নয়।

 দৃশ্যপট ২: 'N' এর একমাত্র সম্বল পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত অল্প জমি। আর্থিক অসচ্ছলতায় তার চাষাবাদ করাটা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধাদি পেয়ে তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।

একটি দেশের লোকসংখ্যা ১৬ কোটি। ঐ দেশের কোনো নির্দিষ্ট বছরে দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত মোট দ্রব্য ও সেবার আর্থিক মূল্য ২৮,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঐ দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার মূল্য ৩,০০০ কোটি টাকা। একই বছরে উক্ত দেশের বাইরে বসবাসকারী ঐ দেশের নাগরিকদের দ্বারা মোট উৎপাদনের আর্থিক মূল্য ৭,০০০ কোটি টাকা।

                   রূপান্তরের প্রধান নিয়ামক (মাধ্যম) Q  

জনাব মিনসেং একজন চীনা ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসে সরকারের অনুমতি নিয়ে রংপুরে একটি কারখানা - প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় অনেক মানুষ তার কারখানায় কাজ করে। অন্যদিকে জনাব পলাশ সখিপুরে গ্রামে বসবাস করেন। স্নাতক পাস করে সে তার গ্রামে একটি ছোট কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ঋণ না পাওয়ার কারণে সে এটাকে বড় করতে পারছে না। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মূর্খ হওয়ায় সে তার কারখানার জন্য দক্ষ ও শিক্ষিত শ্রমিক পাচ্ছে না। রাস্তাঘাট ভাঙা হওয়ার কারণে সে পরিবহণ সমস্যারও মুখোমুখি হয়।

সাদিয়া বাংলাদেশ থেকে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে 'X' নামক দেশে পড়াশুনা করতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান ঐ দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বেশ ভালো, কৃষিতে ট্রাক্টর ও উন্নত বীজ ব্যবহার করা হয় এবং বাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল। আবার সাদিয়ার বোন 'Y' নামক একটি দেশে বাস করে। সেখানকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত। ওখানকার জনগণের বর্তমান মাথাপিছু আয় ৭৪০ মার্কিন ডলার। উন্নয়নের ধারা অনেকটা স্থবির।